‘একরাশ সূর্যকিরণ ছড়িয়ে সহাস্যে উঠেছিলে ফাঁসির মঞ্চে/ দৃঢ় প্রত্যয়ী এক মানবাত্মা হয়েছিল মুক্ত/ মিশেছিল পরমাত্মায় বীরের প্রত্যয় নিয়ে/ কিন্তু রেখে গিয়েছিল এক অনাগত বিস্ফোরণের বারতা/ যেমন এক মহাবিস্ফোরণে অনেক বিলিয়ন বছর আগে/ সৃষ্টি হয়েছিল মহাবিশ্বের/ তুমি পুনর্জন্মে বিশ্বাসী ছিলে কিনা জানা নেই/ শুধু জেনেছি সব স্বপ্ন পূরণের আগেই ঠিক আমারি বয়সে/ পরেছিলে জ্বান্তার করাল গ্রাসে/ তুমি, প্রীতিলতা, কানাইলাল কলম-কালি ছেড়ে/ হাতে নিয়েছেলে আগ্নেয়াস্ত্র, লাল বর্ণে লিখেছো বিদ্রোহের দিনলিপি।’
আজ ১২ জানুয়ারি। ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের কিংবদন্তি বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেনের ৮৬তম ফাঁসি দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সকালে জেম সেন হলস্থ সূর্যসেনের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও বিকেল ৪ টায় চেরাগী পাহাড়স্থ সুপ্রভাত স্টুডিও হলে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। ‘মহাবিপ্লবী সূর্যসেন’ শিরোনামে এতে প্রবন্ধ পাঠ করবেন কলামিস্ট এ কে এম আবু ইউসুফ। উল্লেখ্য, মাস্টারদা সূর্যসেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ রাউজানের নোয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তিরূপে এ মহানায়ক ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৩৪ সালে ১২ জানুয়ারি মধ্যরাতে চট্টগ্রাম কারাগারে সূর্য সেনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার পূর্বে সহযোদ্ধাদের উদ্দেশে সূর্য সেন লিখে গেলেন, ‘আমি তোমাদের জন্য রেখে গেলাম মাত্র একটি জিনিস, তা হলো আমার একটি সোনালি স্বপ্ন। স্বাধীনতার স্বপ্ন। প্রিয় কমরেডস, এগিয়ে চলো। সাফল্য আমাদের সুনিশ্চিত।’ তাঁর লাশ বস্তাবন্দী করে দূরসমুদ্রে ফেলে দেয় ব্রিটিশ সেনারা। বাংলার মাটিতে কোথাও যেন তাঁর চিহ্ন না থাকে। কিন্তু বিপ্লবী আত্মার যে মৃত্যু নেই। সূর্য সেন এ দেশের নির্যাতিত মানুষের হৃদয়ে তাই আজও অমর।
ctaj24.com/st