জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন(অব.) আবদুল মাজেদের ফাঁসি দিতে এখন আর কোন বাঁধা নেই। তার প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করে দিয়েছেন।
মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করতে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।বুধবার দুপুরে এই পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হেলাল চৌধুরী।এর পরপরই আসামীর পক্ষে প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতির দপ্তরে প্রেরণ করা হয়।
বঙ্গভবন সূত্রে বলা হয়, তার প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করে দিয়েছেন।
বুধবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি আবদুল মাজেদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন ঢাকার তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল। সেই রায়ে আবদুল মাজেদসহ ১৫ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এরপর ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের দেয়া রায়ে ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ। এরপর মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত পাঁচ আসামি রিভিউ আবেদন করেন। তবে সেই রিভিউ খারিজ করে দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
এরপর ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই পাঁচ আসামি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), এ কে বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিন (আর্টিলারি) এর ফাঁসি কার্যকর হয়।
গত মঙ্গলবার ভোর তিনটার দিকে মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর এলাকা থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।এরপর তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে মাজেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
আবদুল মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত আরও পাঁচ খুনি বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন: খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এরা সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন এই মাজেদ। জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করতে এখুনি সময়।