মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
পূর্ণিমার জোয়ারে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ, এতে বেশ খুশি জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মুখে।
সরেজমিনে সোমবার বাঁশখালীর সবচেয়ে বড় মাছের বাজার শেখেরখীলের ফাঁড়ির মুখ ও সরকার বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ফিশিং ভর্তি ইলিশ বোট থেকে ঘাটে নামাচ্ছেন শ্রমিকেরা। সোখানে মাছের আড়ত ফিশারি ঘাটে বসেছে ইলিশের মেলা। আড়তে সাজিয়ে তা বাজারজাত করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রান্তে। জেলেদের ধরা মাছ আড়তে তুলে হাঁক-ডাক দেওয়া হচ্ছে। ইলিশের বড় ছোট আকার দেখে আলাদা করা হচ্ছে। ইলিশগুলোকে বরফ দিয়ে ঢেকে রাখা হচ্ছে খাঁচিতে। এরপর তোলা হচ্ছে ট্রাকে।
নির্ধারিত দামে সেসব মাছ কিনে নিচ্ছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ক্রেতারা। এরপর দূর-দূরান্তে নেওয়ার জন্য ড্রামে সংরক্ষণ করা হচ্ছে মাছগুলো। জেলেদের হাত থেকে আড়তদার, সেখান থেকে পাইকার এবং বেপারিদের হাত ঘুরে এসব মাছ চলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ও ঢাকা, চাঁদপুর, বরিশাল, যশোরসহ দেশের বড় বড় আড়তে।
বাঁশখালী বোট মালিক সমিতির দেওয়া তথ্য মতে, বাঁশখালীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে প্রায় হাজারো ফিশিং বোট বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। শেখেরখীলের ফাঁড়ির মুখ, বড়ঘোনা খাটখালী, খানখানাবাদ প্রেমাশিয়া, চৌধুরী ঘাট ও চাম্বল বাংলাবাজার ঘাটে ফিশিং বোট থেকে মাছ নামানো হয়।
ফাঁড়ির মুখ এলাকার মা বাবার দোয়া ফিশিং এর মালিক ও মৎস ব্যবসায়ী আবু হানিফ মাঝি ও জাকের মাঝি জানান, বড় ফিশিং বোটে টেকনাফের পশ্চিমে ঝিনজিরা এলাকায় গভীর সাগরে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে। বড় নৌযানগুলো গভীর সাগরে অবস্থান করে থাকে। অন্যদিকে সোনাদিয়ার পশ্চিমে ও কুতুবদিয়ার দক্ষিনে টং ঝাল বসিয়ে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে। নির্দিষ্ট সময়ে ছোট ছোট ট্রলার গুলো সাগরে গিয়ে বড় ফিশিং ট্রলার থেকে মাছগুলো তীরে নিয়ে আসে।
বাঁশখালী বোট মালিক সমিতির সহ সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হোসেন ভুট্টো
বলেন, সাগরে যেতে প্রতিটি ট্রলারে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। এত দিন খালি হাতে ফেরত আসায় হতাশ ছিলাম, এখন খুশি। ইলিশের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে লইট্টা মাছ জালে ধরা পড়ছে। ট্রাকে করে এসব ইলিশ চট্টগ্রাম এবং ঢাকার যাত্রাবাড়ী,করওয়ান বাজার, চুপারী ঘাট এলাকা সহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় বাজার গুলোতে প্রতিনিয়ত জুয়া মৌসুমে প্রতিদিন দেড় কোটি টাকার উপরে মাছ রপ্তানি দেওয়া হয়।
এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার থেকে ১২ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি মণ পাইকারী হিসেবে ৩৫ হাজার ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। আর মাঝারি ৪০০/৫০০ গ্রাম কেজি ৪ শত টাকা করে প্রতি মণ ১৬ হাজার এবং ৭০০/৮০০ গ্রাম প্রতি কেজি ৭ শত টাকা করে মণ ২৮ হাজার পাইকারী বাজারে বিক্রি হয়।
উপজেলার মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়,
প্রতিনিয়ত গড়ে ৪০০ থেকে ১ হাজার গ্রাম ওজনের ইলিশ বাঁশখালীর জেলেদের জালে বেশি ধরা পড়ে। প্রথম দিকে জেলেদের জালে তেমন আশানুরূপ মাছ ধরা পড়েনি । জো-এর দিনক্ষণ মিলিয়ে সামনে আরো ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।