রাত পোহালেই চকবাজার ওয়ার্ডের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ বিকেল থেকে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে যাবে ইভিএম মেশিন ও ভোট গ্রহণ সরঞ্জাম। এদিকে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রচার-প্রচারণা শেষ হলেও ভোটগ্রহণ নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। শেষদিনে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটান প্রার্থী ও সমর্থকেরা। অনেকেই বড় শোডাউন করে নিজেদের শক্তি জানান দিয়েছে। রিটার্নিং অফিসার ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। কাল (বুধবার) বিকেল থেকে সকল ভোটকেন্দ্রে ইভিএম মেশিন পৌঁছে যাবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে একটি ওয়ার্ডে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ঘরানার প্রার্থী রয়েছেন ২০ জন। প্রার্থীদের মধ্যে কিশোর গ্যাং লিডারখ্যাত দুই জন, আছেন পেশীশক্তি ও প্রভাব বিস্তারকারী দুই-তিনজন প্রার্থী। তাদের পক্ষে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা বেড়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। কিশোর গ্যাং ও বহিরাগত লোকজন ভোটকেন্দ্রে প্রভাব-পেশীশক্তি বিস্তারের আশঙ্কায় রয়েছেন ভোটাররা।
রিটার্নিং অফিসার জানান, নির্বাচনে জেলা প্রশাসনের ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। একজন ম্যাজিস্ট্রেট তিনটি ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন। র্যাব ও পুলিশের মোবাইল টিমের সঙ্গে থাকবেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার মিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬ সদস্য এবং গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে থাকবে ১৮ জন। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে পুলিশ-র্যাবের একটি করে টিম থাকবে।
নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, ২১ প্রার্থীর মধ্যে চার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের প্রতি বিশেষ নজরদারি থাকবে। ভোটকেন্দ্রের বাইরে দল বেঁধে জটলা পাকানো ও বহিরাগতদের দিকে নজর থাকবে। এরমধ্যে পুলিশের তালিকাভুক্ত দুই কিশোর গ্যাং লিডারের প্রতি বিশেষ নজর থাকবে। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বড় ভাইদের পক্ষে ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা প্রার্থী ও ভোটারদের।
গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়ে যায়। নির্বাচনে প্রার্থী আছেন ২১ জন। এরমধ্যে বিএনপি ঘরানার প্রার্থী আছেন একজন। অন্য ২০ জন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
ভোটের মাঠে রয়েছেন প্রয়াত কাউন্সিলর সাইয়্যেদ গোলাম হায়দার মিন্টুর স্ত্রী মেহেরুন্নিসা খানম (ড্রেসিং টেবিল), তরুণ ক্রীড়া সংগঠক মো. আলী আকবর হোসেন চৌধুরী (মিন্টু) (কাঁটা চামচ), মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন (রেডিও), এ কে এম সালাউদ্দীন কাউসার লাভু (হেডফোন), কাজী মো. ইমরান (লাটিম), মোহাম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী (সূর্যমুখী ফুল), মোহাম্মদ সেলিম রহমান (ঠেলাগাড়ি), মোহাম্মদ নোমান চৌধুরী (ট্যাক্টর), মো. শাহেদুল আজম (ক্যাপ), মো. নাজিম উদ্দীন (কাঁচি), মো. নুরুল হুদা (ঝুড়ি), মো. সামশের নেওয়াজ (ঘুড়ি), মমতাজ খান (পান পাতা), শওকত ওসমান (এয়ারকন্ডিশনার), মো. রুবেল সিদ্দিকী (করাত), মো. আজিজুর রহমান (হেলমেট), মো. আলাউদ্দীন (টিপিন ক্যারিয়ার), মো. জাবেদ (স্ট্রবেরি), কায়সার আহম্মদ (প্রদীপ), মো. নূর মোস্তাফা টিনু (মিষ্টি কুমড়া) ও মো. আবদুর রউফ (ব্যাডমিন্টন র্যাকেট)।
ভোটার সংখ্যা ৩২ হাজার ৪১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ২১৬ জন এবং নারী ভোটার ১৫ হাজার ৮২৫ জন। ১৫টি ভোটকেন্দ্রে ৮৬টি ভোটকক্ষে ভোট দেবেন ভোটাররা। ভোটগ্রহণে প্রিসাইডিং অফিসার ১৫ জন, সহকারী প্রিসাইডিং ৮৬ জন ও পোলিং কর্মকর্তা ১৭২ জনসহ ২৭৩ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
চকবাজার ওয়ার্ডে ৭ বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর প্রবীণ রাজনীতিবিদ সাইয়্যেদ গোলাম হায়দার মিন্টু মারা যাওয়ায় উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সি-তাজ২৪.কম/এস.টি