G-VV5KW25M6F
Take a fresh look at your lifestyle.

করোনাভাইরাস:বাইরে থেকে ঘরে ঢুকতে যা সতর্কতা নেবেন?

0

 

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পুরো দেশেই চলছে অঘোষিত লকডাউন। স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস আর সব ধরণের কল-কারখানা বন্ধ থাকার কারণে প্রায় সবাইকেই ঘরে থাকতে হচ্ছে।

তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে কিংবা স্বাস্থ্যসেবা নিতে সাধারণ মানুষদের অনেকেই বের হতে হচ্ছে ঘর থেকে।

এছাড়া যারা জরুরী সেবা ও কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত তারাও অনেকেই দিনের একটা সময় ঘরের বাইরে থাকছেন।

পেশাগত কারণে প্রায় প্রতিদিনই বাইরে বের হতে হয় ফজলে রব্বি ইসাত। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমণ হওয়া নিয়ে যে উদ্বিগ্নতার মাত্রা বলে বোঝানো যাবে না।

তিনি জানান, বাইরে বের হওয়ার বিষয়ে যত ধরণের সাবধানতার পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব তার সবই নিয়ে থাকেন তিনি। এমনকি ঘরে নিজের পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে দূরে থাকেন তিনি।

“যে জুতাটা পরে বের হই সেটা ঘরে ঢোকাই না। আমি আলাদা ঘরে থাকি। খাবারটা রেডি করে একটা জায়গায় রেখে দেয়, আমি খেয়ে নেই।”

“ছোট একটা বাচ্চা আছে। সে আমার কাছে আসতে চায়। সবকিছু মিলে তো একটু কঠিনই।”

চকবাজারের স্কুল শিক্ষক সাধিয়া আক্তার। তিনি বলেন, সাপ্তাহিক বা চার থেকে পাঁচ দিন পর পর বাজার আর ওষুধ কিনতে লকডাউনের মধ্যেও বাইরে বের হতে হয় তাকে।

এই সময়টাতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়ে যায় কিনা তা নিয়ে বেশ দুঃচিন্তার মধ্যেই থাকতে হয় তাকে।

তিনি বলেন, “অবস্থাটা এমন যে, বাসার কাউকে বাইরে বের হতে দিতে মন চায় না। আবার নিজে বের হলেও একটা অস্থিরতা কাজ করে।”

তবে বাইরে গেলেও কিছু সাবধানতা মেনে চলেন তিনি। বলেন, হাতে গ্লাভস আর মুখে মাস্ক পরে বাইরে বের হন। আর বাইরে থেকে আসলে বাথরুমে গিয়ে ডেটল পানি দিয়ে কাপড় ধুয়ে গোসল করেন তিনি।

“তবে এরপরেও মনে চিন্তা থেকে যায়। মনে হয় যে, কোন কারণে হয়তো জার্মস চলে এসেছে শরীরে, কোথাও হয়তো রয়েছে জীবাণু,” তিনি বলেন।

এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন খুব বেশি জরুরী না হলে বাইরে বের না হওয়ার।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. আফজালুননেসা সংবাদ কর্মীকে বলেন, কাজ কতটা জরুরী আগে সেটা বিবেচনায় নিতে হবে। তারপর বাইরে বের হয়ে ফেরার পর বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

তিনি বলেন, “কমিউনিটি সংক্রমণ যেহেতু শুরু হয়ে গেছে, তাই ধরেই নিতে হবে যে আমাদের চারপাশে সবাই ইনফেকটেড। সেটা চিন্তা করেই সতর্কতাও সেভাবে নিতে হবে।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, বাইরে বের হতে হলে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বের হতে হবে। আর ঘরে ঢোকার সময়ও নিতে হবে সতর্কতা।

তারা যে পরামর্শগুলো দিয়েছেন সেগুলো হলো-

১. জরুরী কাজের তালিকা করা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোন একটি বা দুটি নয় বরং বেশ কয়েকটি জরুরী কাজ হলে তারপরই বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। একদিনের জন্য পণ্য না কিনে বরং এক সপ্তাহে কী কী লাগবে সে পরিমাণ হিসাব করে বাজার করতে হবে। বাইরে বের হওয়ার আগে সেসব জরুরী কাজের তালিকা তৈরি করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব সেগুলো শেষ করতে হবে। এসময় অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

২.মাস্ক ও গ্লাভস পরা

বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ও গ্লাভস পরে বের হতে হবে। আর ঘরে ঢোকার পর অবশ্যই মাস্কটি ফেলে দিতে হবে কিংবা সেটি পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। হাতের গ্লাভসটিও প্রয়োজনে সাবান-পানি ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।

৩. ঘরে প্রবেশের মুখে জীবাণুনাশক ও জুতা ব্যবহারে সতর্কতা

ঘরে প্রবেশের আগে যদি সাবান-পানির মিশ্রণ কিংবা ক্লোরিন মিশ্রিত পানি কোন একটি স্থানে রাখা যায়, যাতে জুতা ও পা ডুবিয়ে প্রবেশ করতে হবে। যে জুতা পরে বাইরে বের হবেন সেটিকে অবশ্যই ঘরের বাইরে রাখতে হবে। জীবাণুমুক্ত না করে কোনভাবেই সেটিকে ঘরে তোলা যাবে না।

৫. পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে দূরে থাকা

ঘরে প্রবেশের সাথে সাথে পরিবারের লোকজন যাতে কাছে না আসে সেটি মাথায় রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্ক সদস্যদের থেকে দূরে থাকতে হবে। সম্পূর্ণভাবে জীবাণুমুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এটি কড়াকড়িভাবে মেনে চলতে হবে।

৬. হাত ও মুখ ধোয়া

বাসায় ঢুকেই হাত কনুই পর্যন্ত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সাথে মুখমণ্ডলও সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সম্ভব হলে বাইরে থেকে ঘরে ঢুকে কারো সংস্পর্শে আসার আগে বাথরুমে গিয়ে গোসল করে ফেলতে হবে। পরিহিত পোশাকটিও সাবান-পানি দিয়ে ভিজিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

৭. দ্রব্য জীবাণুমুক্ত করা

বাইরে থেকে যে পণ্যদ্রব্য কিনে আনা হবে সেগুলো অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করে তারপর সংরক্ষণ করতে হবে। জীবাণুমুক্ত করার ক্ষেত্রে শাকসবজি ও ফলমূল ভিনেগার মিশ্রিত বা লবণ পানিতে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর সংরক্ষণ করা যাবে। বাজারের ব্যাগ বা অন্য প্যাকেট সাবান-পানি বা ডেটল-পানি নিয়ে স্প্রে করে বা কাপড় ভিজিয়ে সেটি দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। ওষুধের স্লিপ বা প্যাকেটগুলোও সাবান পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।

৭. গরম পানির ভাপ নেয়া ও গারগেল করা

বর্তমান পরিস্থিতি খুব কাজে আসবে যদি কেউ বাইরে থেকে এসে ঘরে ঢুকে গরম পানির ভাপ নেয়। কুসুম গরম পানিতে একটু লবণ দিয়ে ভালভাবে গলগলা করতে হবে। লেবু দিয়ে চা খাওয়া যাবে।

সি-তাজ২৪.কম/এস.টি

Leave A Reply

Your email address will not be published.