দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে পাষণ্ড স্বামীর দায়ের কোপে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। স্ত্রীকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে স্বামী নিজেই ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে খবরটি দিয়েছেন। পরে হাসপাতালে স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তাঁর নাম নুসরাত শারমিন (৩০)।
এ ঘটনায় পুলিশ স্বামী আবদুর রহিম (৩৮) কে আটক করেছে। রহিম ঢেমশা ইউনিয়নের উত্তর ঢেমশা ৬নং ওয়ার্ড সিকদার পাড়ার ডা. নুরুল আমিনের বাড়ি এলাকার রমজু মিয়ার ছেলে।
আজ (১৭ সেপ্টেম্বর) বৃহষ্পতিবার বেলা আড়াটার সময় ঢেমশা ইউনিয়নের উত্তর ঢেমশা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে নুসরাত বাপের বাড়িতে যান। বৃহষ্পতিবার আড়াইটার দিকে তার ভাই নুসরাতকে স্বামীর ভাড়া বাসায় পৌঁছে দেন। স্বামী আবদুর রহিম গত তিন মাস আগে উত্তর ঢেমশা আবেদীনের বাড়ির পাশে ভাড়া বাসায় স্ত্রী নুসরাতসহ এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে উঠেন। ওই ভাড়া বাসার পাশে ছিল আবদুর রহিমের বোনের বাড়ি। নুসরাতকে পৌঁছে দিয়ে ভাই চলে যাওয়ার পর বাসার ভেতর কয়েকটি শব্দ শুনতে পান পার্শ্ববর্তী বাড়ির তসলিমা আক্তার নামের এক মহিলা।
এ সময় স্বামী আবদুর রহিম তার স্ত্রী নুসরাত শারমিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে বাইরে তালা লাগিয়ে ছেলেকে পার্শ্ববর্তী বোনের বাড়িতে রেখে আসেন। পরবর্তীতে আবার মেয়েকে নিয়ে যান বোনের বাড়িতে। এসময় আবদুর রহিম তার স্ত্রীকে মেরে ফেলব বলে বকতে থাকেন। ঘরের ভেতর আহত স্ত্রীকে রেখে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে ঘটনার কথা বলে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে আটক করে।
পরে পুলিশ ঘরের ভেতর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় আহত নুসরাতকে উদ্ধার করে কেরানীহাট আশ শেফা হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাত শারমিন বৃহস্পতিবার রাত ১০টার সময় মারা যান। ঘাতক রহিম স্ত্রী নুসরাতকে মাথার সামনে পেছনে তিনটি কোপ দেয়।
জানা যায়, স্বামী আবদুর রহিম সবসময় স্ত্রী নুসরাতকে ঘরের ভেতরে রেখে বাইরে তালা লাগিয়ে রাখতেন। স্ত্রীকে কোথাও বের হতে দিতেন না। তার চাচাত ভাই ফরিদুল আলম বলেন, আবদুর রহিম একজন মানসিক প্রতিবন্ধি। তিনি বিগত ৪ বছর ধরে রোয়াংছড়ি এলাকা থাকতেন। তিনি ওখানে টিউশনি করতেন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হলে লকডাউনের কারনে তিনি বাড়ি আসেন।
ফরিদুল আলম আরো জানান, আবদুর রহিম ঠিকমত বাড়িতে থাকতেন না। বিভিন্ন সময়ে তিনি গরুর গোয়াল ঘরেও ঘুমাতেন। সাতকানিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে স্বামী আবদুর রহিমকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র জাহেদ উদ্দিন সবুজ বলেন মূলত পারিবারিক কলহের জেরে ওই নারীকে ইচ্ছেমতো কুপিয়েছে নারীর হাসবেন্ড । মাথার কয়েক যায়গায় থেঁতলে গেছে। ঘাঁড় মুখে মাথার বেশ কয়েক স্থানে বড় রকমের আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট আমার চোখে এখনো ওই নারীর বিভৎস মুখখানা ভাসছে। কতো সুন্দর স্বপ্ন নিয়েইতো শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিল মেয়েটি। দুটো বাচ্চাও আছে শুনলাম।