বাঁশখালী চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার এক কলেজ ছাত্রীকে আয়শা ছিদ্দিকাকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে বিয়ে করে বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নের আবু নাঈম নামে এক লম্পট। এর আগে আরো ৩ স্ত্রী থাকলেও বিষয়টি গোপন করে লম্পট আবু নাইম। এদিকে বছর না ঘুরতেই কলেজ ছাত্রীর আয়শার উপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। আয়শার ১০ দিনের নবজাতক সন্তান কেড়ে নিয়ে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করে স্বামী নামের নরপশু। শুধু তাই নয়; ৫ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় ৪র্থ স্ত্রী কলেজ ছাত্রী আয়শাকে পিটিয়ে বের করে দেয়া হয় ঘর থেকে। এনিয়ে আয়শা মামলা দায়ের করলে আবু নাঈম ও তার সহযোগীতা আরো ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে। আয়শা ও তার পরিবারের উপর দফায় দফায় হামলা করে। মামলা করার অপরাধে আয়শার ভাই মোরশেদকে পিঠানো হয় উলঙ্গ করে। বর্তমানেও লম্পট আবু নাঈম ও তার লোকজন আয়শা ও তার পরিবারকে খুন জখম ও অপহরণসহ নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। অপরদিকে নির্যাতিতা আয়শা বিচারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। বিচার না পেয়ে ছাত্রী আয়শা ও তার পরিবার হতাশ।
জানা গেছে, আয়শার ভাই মোরশেদুল আলম একটি মামলার বাদী। আসামীরা ওই মামলায় জামিনে এসেই বাদী মোরশেদকে রাস্তায় পথ আটকে ধরে উলঙ্গ করে উপর্যুপরি হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এবং ছুরিকাঘাত করে অজ্ঞান করে পালিয়ে গেছে। সন্ত্র্রাসীদের হাতুড়ি পেটায় মোরশেদের দুই পা ভেঙে পঙ্গু হয়ে গেছে। সাতকানিয়া সরকারি কলেজে অনার্সে পড়–য়া ছাত্র মোরশেদুল আলম কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার গত ২২ নভেম্বর বেলা ২টায় সরল ইউনিয়নের মধ্যম সরল গ্রামের বড় মাদ্রাসার সামনে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে উপস্থিত জনতা মোরশেদুলকে গুরুতর আহত ও অজ্ঞান অবস্থায় বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। ওখানের কর্তব্যরত ডাক্তার আশংকাজনক অবস্থায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। গৃহবধূ আয়েশার পরিবার এবং মামলার বাদি ও সাক্ষীকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দেয়া বাঁশখালীর সরল ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার উদ্যোক্তা পদে নিযুক্ত আয়েশার প্রতারক পাষন্ড স্বামী আবু নাঈম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান।
উল্লেখ্য, এর আগেও সন্ত্রাসীরা মোরশেদুল আলম, তার গ্রীস প্রবাসী ভাই মো. সেলিম, তার বোন আয়েশা ছিদ্দিকা, তার মা নুর নাহার বেগম, বাবা মৌলভী আবুল বশরের ওপর অন্ততঃ ৩ দফা কিরিচ দিয়ে কোপানোর ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়ে চলছে মোরশেদুলের বোন আয়েশা সিদ্দিকার প্রতারক স্বামী বাঁশখালীর সরল ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার উদ্যোক্তা পদে নিযুক্ত আবু নাঈম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। প্রতিটি মামলায় আবু নাঈমই আসামী। এর মধ্যে গ্রীস প্রবাসী ভাই মো. সেলিম দেশে ফেরার আগে হামলার আশংকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু দেশে ফিরে ঠিকই সন্ত্রাসীদের কিরিচের কোপে আহত হয়েছেন। পাষন্ড স্বামী আবু নাঈম নিজ আইডি থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা অশ্লীল ছবিসহ কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ছড়িয়ে আয়েশাকে সামাজিকভাবে হেয় করেছে। অভিযোগ আছে, আয়েশা ছিদ্দিকাকে পিটিয়ে ১০ দিন বয়স্ক নবজাতক কন্যাকে তার স্বামী সাতকানিয়া উপজেলার আলীনগর গ্রামে ২লাখ টাকায় বিক্রয় করে দিয়েছেন। লোমহর্ষক এসব অপরাধ ঘটিয়ে ৩টি মামলা ও ৪টি জিডি’র সংশ্লিষ্ট অপরাধীরা জামিনে এসে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। গৃহবধূ আয়েশার পরিবার এবং মামলার বাদি ও সাক্ষীকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। সর্বশেষ গত রবিবার ২২ নভেম্বর বেলা ২টায় সরল ইউনিয়নের মধ্যম সরল গ্রামের বড় মাদ্রাসার সামনে প্রকাশ্যে আবু নাঈম ও তার সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সরল ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ চৌধুরী বলেন, মোরশেদের ওপর হামলার ঘটনা শুনেছি। কারা ঘটিয়েছে তা জানি না। তবে আবু নাঈমের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তা নিয়ে কয়েকদফা সালিসী বৈঠকও হয়েছে। বাঁশখালী থানার ওসি সফিউল কবীর বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গেছে। আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। অপরাধ ঘটিয়ে কেউ রক্ষা পাবে না।
নির্যাতিত গৃহবধূ আয়েশা ছিদ্দিকা বলেন,‘ আমার পাষন্ড স্বামী আমাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে আমার নবজাতককে ১০ দিনের মাথায় কেড়ে নিয়ে ২ লাখ টাকায় বিক্রয় করে দিয়েছে সাতকানিয়া উপজেলার আলীনগর গ্রামে। ওই টাকা খরচ করে সন্ত্রাসী দিয়ে আমার ও আমার বাপের পরিবারের ওপর হামলা চালাচ্ছে এবং মামলা খরচও চালাচ্ছে। প্রকাশ্যে হুমকি-ধমকি দিয়ে উর্পযুপরি হামলা করে কিরিচ দিয়ে কুপিয়েছে কয়েকদফা আমাকে, আমার মা-কে ও আমার দুই ভাইকে। এই নিয়ে ৩টি মামলা ও ৪টি জিডি করলেও প্রাণশংকায় ভুগছি। সর্বশেষ আবার আমার ভাইকে উলঙ্গ করে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে অজ্ঞান করে রেখেছে। দেশের আইন আদালতের কাছে আমার সন্তান ও আমার বাপের পরিবারের নিরাপত্তা চাই।’