সিলেট প্রতিনিধি: লেটের ফেঞ্চুগঞ্জে আহলে হাদিস নেতা শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের ওপর হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। তার গাড়িতে হামলার ঘটনায় ইউসুফসহসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের আল-জামিআহ আস-সালাফিয়্যাহ পরিচালক।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার ইসলাম বাজার আল ফুরকান মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করে সিলেটে ফেরার পথে হামলার শিকার হন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মল্লিকপুর গ্রামের মসজিদ আল ফুরকানে রোববার বাদজোহর আলোচনার আয়োজন করে মসজিদ পরিচালনা কমিটি। ওই আলোচনা সভায় আলোচক ছিলেন আল-জামিআহ আস-সালাফিয়্যাহ পরিচালক শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ। মসজিদে জোহরের নামাজ শেষে গাড়িতে করে স্থানীয় একজনের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজে যাওয়ার সময় আব্দুর রাজ্জাকের গাড়িতে হামলা করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের গাড়িবহর রাস্তায় আসামাত্র ১০ থেকে ১২ জন গাড়িতে ইটপাটকেল ও লাঠিসোটা দিয়ে হামলা করে। এতে শায়খের গাড়ির সব গ্লাস ভেঙে যায়। গাড়ির বিভিন্ন অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে আক্রমণকারীরা গাড়ির ভেতরে হামলা চালিয়ে শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, আয়োজক আতিকুর রহমান মিঠু, শায়খের সফর সঙ্গী হুমায়ুন কবির রিপনসহ আরও দুইজনকে আহত করে।
পুলিশ জানায়, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ মল্লিকপুর গ্রামের মসজিদ আল ফুরকানে আলোচনা করতে এসেছেন। তার গাড়িবহরে হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা আল ইসলামের সভাপতি মাওলানা হারুনুর রশীদ বলেন, গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় তালামীয সংগঠনের কোনো কর্মী জড়িত নয়। মল্লিকপুর এলাকায় আমাদের তালামীযের কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এ হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন জেলা তালামীযের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান সাদি, কর্মী মুবিনুল ইসলাম, নজির আলী রুবেল, উপজেলা তালামীযের সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম কুদ্দুস।
ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি মো. শাফায়েত হোসেন জানান, নিষেধাজ্ঞা দেয়া সত্ত্বেও তারা বিতর্কিত এই আলোচককে দাওয়াত করেছেন। এটি মোটেই ঠিক হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ দাখিল করেনি। তবে হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে পুলিশ কাজ করছে।
চিৎকার শুনে গ্রামবাসী এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করেন। গ্রামের ভেতরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গ্রামবাসী, আশপাশের জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে হামলাকারীদের ওপর পাল্টা হামলা করে ও তাদের ৩টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। হামলাকারীদের চারজনকে আটকে রাখে স্থানীয় জনতা। পরে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং চারজনকে আটক করে।
এ ব্যাপারে আয়োজক শওকত হোসেন শামিন বলেন, এরকম ঘৃণ্য আক্রমণের নিন্দা জানাই। গ্রামের ভেতরে মেহমানদের ওপর এরকম হামলা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। এ ব্যাপারে আমরা কমিটি বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিব।
আহতদের ব্যাপারে তিনি বলেন, তারা এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সিলেট শহরে গেছেন। শায়খ হাতে আঘাত পেয়েছেন। এক্স-রে রিপোর্ট আসলে বাকিটা বোঝা যাবে।
এ ব্যাপারে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাফায়াত হোসেন বলেন, আমরা যাদেরকে আটক করেছি এদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেছি। এরা কি করে, কেন ওই জায়গায় গিয়েছিল এসব খোঁজ নিচ্ছি। খোঁজ-খবর নেওয়ার পরে বিস্তারিত বলা যাবে।
সি-তাজ২৪.কম/এস.টি