G-VV5KW25M6F
Take a fresh look at your lifestyle.

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

0

 

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন সংগঠনের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। আজ রোববার রাত ১১টায় এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই ঘোষণা দেন।

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার পরামর্শে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। ইনশা আল্লাহ আগামী দিনে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে হেফাজতের কার্যক্রম শুরু হবে।

এর আগে রোববার বিকেলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়। আল-হাইআতুলের অধীনেই কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা হয়ে থাকে। যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসায় আল-হাইআতুলের স্থায়ী কমিটির সভায় ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতির বাইরে থাকার ওই সিদ্ধান্ত হয়। তাঁদের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত জানাবেন বলেও ঠিক হয়।

গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ–সহিংসতার পর হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। বিক্ষোভ–সহিংসতার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৭৯টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৬৯ হাজারের বেশি জনকে আসামি করা হয়েছে।

এসব মামলায় প্রতিদিনই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এর মধ্যে রোববার পর্যন্ত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ১৯ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দিলেন বাবুনগরী।

হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনটির একাংশের সঙ্গে বিরোধের মধ্যে গত বছরের ১৫ নভেম্বর এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। জুনায়েদ বাবুনগরী নেতৃত্বাধীন কমিটিতে শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী এবং তাঁর অনুসারী কাউকে রাখা হয়নি।

মোদির সফরের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হয়। এ সময় সংঘাত–সহিংসতায় সরকারি হিসেবে ১৭ জন নিহত হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের অন্যান্য স্থানে ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এই ঘটনার রেশ যেতে না যেতেই গত ৩ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে দ্বিতীয় স্ত্রীসহ ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন। হেফাজতের নেতা–কর্মীরা সেখানে হামলা চালিয়ে মামুনুলকে ছিনিয়ে নেন। মূলত এরপর থেকে হেফাজতের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা দৃশ্যমান হয়। ১১ এপ্রিল হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর হেফাজতের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তারের ধারাবাহিকতায় ১৮ এপ্রিল আলোচিত মামুনুল হককে ধরা হয়।

এর পরদিন রাতে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বাসায় যান। তাঁরা অযথা কাউকে হয়রানি–গ্রেপ্তার না করার দাবি জানান। এ ছাড়া হেফাজতে ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে নয় বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছিলেন হেফাজত নেতারা।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান রোববার দুপুরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের হেফাজত সম্পর্কে বলেছেন, যতই আপসের চেষ্টা করা হোক না কেন, সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি পেতে হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.