G-VV5KW25M6F
Take a fresh look at your lifestyle.

দেয়ালে টাঙানো ছবি দেখে পুলিশ ধরে নেয় আত্মহত্যায় বড় প্ররোচনা আছে

0

বড় ধরনের প্ররোচনা আছে, এই আশঙ্কা থেকেই মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা নেয় পুলিশ। মোসারাতের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ স্বপ্রণোদিত ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করেছে। বৃহস্পতিবার পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ভাড়া বাসা থেকে মোসারাতের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ এসে তাঁকে নামায় ও বিছানায় শুইয়ে দেয়। বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারে বলে মোসারাত তাঁর পরিবারকে জানিয়েছিলেন। এই ঘটনায় ওই রাতেই মোসারাতের বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি করে আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলা করেন।
মোসরাতের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আসামি প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে পুলিশ কী মনে করে, জানতে চাওয়া হলে পুলিশ উপকমিশনার বলেন, ফ্ল্যাট থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর ভুক্তভোগী তরুণীর বোন পুলিশকে জানানোয় উৎসাহী ছিলেন না, তাঁরা মামলা করতেও অতটা ইচ্ছুক ছিলেন না। বাড়ির মালিক পুলিশকে জানান। গুলশানের সেই ফ্ল্যাটে গিয়ে দেয়ালে টাঙানো মোসরাতের সঙ্গে আনভীরের ছবি দেখা যায় এবং কয়েকটি ডায়েরি পায় পুলিশ। ডায়েরিগুলোয় ‘সুইসাইডাল নোটের’ মতো অনেক কিছু লেখা। এসব দেখে পুলিশ অনুমান করে, একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণী মাত্র ২১ বছর বয়সে কোনো কারণ বা প্ররোচনা ছাড়া আত্মহত্যা করতে পারে না। সে রাতেই পুলিশ যা যা তথ্য সংগ্রহ করার দরকার, তার সব সংগ্রহ করে এবং তাৎক্ষণিক সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মামলা হয়। ওই রাতে তিনিসহ, গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার, সহকারী কমিশনার, গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সব কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছিলেন। এই মামলায় যেন ন্যায়বিচার হয়, সে ব্যাপারে শুরু থেকেই পুলিশ উদ্যোগী ছিল।

আসামি কোথায় জানতে চাইলে উপকমিশনার বলেন, অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আসামি বাংলাদেশে আছেন। তিনি দুটি পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে দেশত্যাগের কোনো রেকর্ড নেই।

        বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীর

আত্মহত্যায় প্ররোচনার কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে কি না, জানতে চাইলে সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, তাঁরা ২০২০–২১ সাল পর্যন্ত লেখা ডায়েরি উদ্ধার করেছেন। ওই ডায়েরিতে ধারাবাহিকভাবে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত লিখেছেন মোসারাত। একটি পৃষ্ঠায় তিনি বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে লিখেছেন। কিন্তু তাতে কোনো তারিখ ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, এটা তিনি লিখেছেন ২৬ এপ্রিল এবং এতে আত্মহত্যার ইঙ্গিত ছিল। ডায়েরির একটি জায়গায় মোসারাত তারিখ না দেওয়া পৃষ্ঠাগুলো পড়ার অনুরোধ করেছেন, কোনোভাবেই যেন ওই পৃষ্ঠাগুলো কেউ এড়িয়ে না যায় সে কথাও বলেছেন। ছয়টি ডায়েরিতেই মোসারাত তাঁদের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে লিখেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর টাকা–পয়সার লেনদেনসংক্রান্ত একটি অডিও পাওয়া যায়। ওই অডিও পরীক্ষা–নিরীক্ষার আওতায় আনবে পুলিশ।
শেষ কার সঙ্গে মোসারাতের কথা হয়েছিল? ফোনটি সচল ছিল কি না, জানতে চাইলে গুলশান বিভাগের উপকমিশনার বলেন, মোসারাত দুটি ফোন ব্যবহার করতেন। একটি ফোন মৃত্যুর পরও সচল ছিল। তবে শেষ কার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন, সে সম্পর্কে পুলিশ তথ্য দিতে চায়নি। কথা বলার কতক্ষণ পর মোসারাত আত্মহত্যা করেন, তা–ও বলেনি পুলিশ।

মামলার এজাহারে পিয়াসা ও পরে হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীর নাম এসেছে। তাঁদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ জানায়, মামলার তদন্তে যাঁর যাঁর নাম আসবে, প্রত্যেকের সঙ্গে পুলিশ কথা বলবে। প্রাসঙ্গিক বক্তব্য আদালতে ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ করার ব্যবস্থাও করবে।

সি-তাজ২৪.কম/এস.টি

Leave A Reply

Your email address will not be published.