G-VV5KW25M6F
Take a fresh look at your lifestyle.

সিনহাকে ডাকাত সাজিয়ে হত্যার ছক ছিল ওসি প্রদীপের

0

 

মেজর (অব.) সিনহাকে ডাকাত পরিচয় দিয়ে হত্যার জন্য দুই ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার তৃতীয় দফায় সাক্ষ্য গ্রহণের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার দশম সাক্ষী হাফেজ জহিরুল ইসলাম আদালতে এমন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে তিনি টেকনাফের দক্ষিণ মাথাভাঙ্গা জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন। ঘটনার দিন রাতে উত্তর মারিসবুনিয়া ওমরুল কোরআন জামে মসজিদে এশার আজান দিচ্ছিলেন।

আদালতে তিনি বলেন, ‘আজান শেষ হওয়ার পর শুনতে পাই, অন্য একটি মসজিদ উত্তর মারিসবুনিয়া জামে মসজিদে মাইকিং করা হচ্ছিল পাহাড়ে বাতি দেখা যায়, এলাকার মানুষ সতর্ক থাকবেন- ওরা ডাকাত। আমি শুনতে পাই, মাইকিং করা ব্যক্তি নিজামুদ্দিন। আমি সঙ্গে সঙ্গে ওই মসজিদের ইমাম মাওলানা মুক্তারকে ফোন করি। আমি নিশ্চিত হয়ে জানতে চাই এ মাইকিং করছে কে? তখন আমি নিশ্চিত হই, ওই ব্যক্তি নিজামুদ্দিন। এরপর আমার ইমামতিতে এশার ফরজ নামাজ আদায় করি। আমাদের মসজিদে আমার আগে মাওলানা হোসেন আহমেদ নামে স্থানীয় একজন ইমাম ছিলেন। তিনি আমাকে বলেন, উত্তর পাড়ার মসজিদে ডাকাত বলে মাইকিং করে দেওয়া হয়েছে। তুমিও মাইকিং করে দাও। আমি উত্তরে বলি, মাইকিং করতে হবে না। উনারা সেনাবাহিনীর লোক, আমি নিজে পাহাড়ে যেতে দেখেছি। ওই সময় আমি সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত লোকটার বর্ণনা দেই। এরপর আমি ডিসি রোড দিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হই।

জহিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‌‘আমি মুইন্না পাহাড়ের কাছাকাছি গেলে দেখতে পাই, দক্ষিণ দিক থেকে আসামি নুরুল আমিন ও আয়াজ আসছেন। তারা আমাকে বলে সেনাবাহিনীর ড্রেস পরে কয়েকজন ডাকাতি করতে এসেছে। টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ মুইন্না পাহাড়ে আসার জন্য বের হয়েছে।’ নুরুল আমিন আমাকে বলেছে যে, ওসি প্রদীপ স্যার তাদের পাঁচ লাখ টাকা দেবে ডাকাত মেরে ফেলার জন্য। তারা আরও বলে, ‘পাঁচ লাখ থেকে দুই লাখ টাকা তোরে দিমু আর দেড় লাখ করে আমরা নেব।’ আমি যেন ডাকাত বলে মাইকিং করে দিই। উত্তরে তাদের আমি বলি, দুই লাখ টাকা আমার প্রয়োজন নেই, আমি মাইকিং করব না।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে ওই সাক্ষ্য দেন জহিরুল ইসলাম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনহা হত্যা মামলার বিচারকাজে যুক্ত একাধিক আইনজীবী। মঙ্গলবার ডা. রনধীর দেবনাথের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কপবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ফরিদুল আলম বলেন, আদালতে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য দিয়েছেন ডা. রনধীর দেবনাথ ও ইমাম জহিরুল ইসলাম। মেজর সিনহাকে হত্যার জন্য ভিন্ন পরিকল্পনাও ছিল আসামিদের হাতে- এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় ইমাম।

সকাল সাড়ে ৯টায় কপবাজার জেলা কারাগার থেকে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজন ভ্যান করে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়। সরকারি কৌঁসুলি ফরিদুল বলেন, মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনকে আদালত নোটিশ দিয়েছিলেন। এই পর্যন্ত ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
সি-তাজ২৪.কম/এস.টি

Leave A Reply

Your email address will not be published.