G-VV5KW25M6F
Take a fresh look at your lifestyle.

প্রাচীন সভ্যতা, প্রত্নতত্ত্ব, মানবসভ্যতার বিবর্তন ও আঞ্চলিক ভাষা গবেষণায় নতুয় প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করতে হবে

0

প্রাচীন চট্টগ্রামের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য, মানবসভ্যতার ধারাবাহিক বিবর্তন, আদি জনপদের নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, বন্দরসভ্যতা, ধর্ম – শিক্ষা এবং আঞ্চলিক চাটগাঁইয়া ভাষার বিকাশকে নতুন প্রজন্মকে সচেতনতা বৃদ্ধি করে বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে হবে। গতকাল (চট্টগ্রাম, ২৮ নভেম্বর ২০২৫)

শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর স্টেশন রোডের হোটেল এশিয়ান এসআর লি. অডিটোরিয়ামে চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র ও দি একাডেমি অব হিস্ট্রি বাংলাদেশ ( ইতিহাসের পাঠশালা ) এর আয়োজনে “চট্টগ্রাম তৃতীয় অনুসন্ধানী লেখক–গবেষক সম্মেলন ২০২৫” অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন জেলার লেখক- গবেষক, ইতিহাস–সাহিত্য অনুরাগী, প্রত্নতত্ত্ববিদ ও সংস্কৃতিচিন্তকের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিনত হয় সম্মেলন। সম্মেলনের ইতিহাসবেত্তা সোহেল মো. ফখরুদ-দীন ” চট্টগ্রামের প্রাচীন জনপদ: ভূপ্রকৃতি, বন্দরসভ্যতা,নৃতাত্ত্বিক পরিবর্তন ও সাংস্কৃতিক ধারাবাহিকতার অনুসন্ধান ” শিরোনামে আটটি অধ্যায়ের শ্রেনিবিন্যাসে ২১ দপার যুক্তি উপস্থাপন করেছেন।

সম্মেলনের বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম কেবল সমুদ্রবন্দর নয়—এ অঞ্চল দক্ষিণ–পূর্ব বাংলার সবচেয়ে প্রাচীনতম নগর–সভ্যতার ধারক। কিরাত রাজ্য, চন্দ্রদ্বীপ সভ্যতা, আরবীয়, আরাকান–বঙ্গ বাণিজ্যপথ, সাঙ্গু–কর্ণফুলী–হালদা নদীর তীরবর্তী বসতি, তাম্রলিপ্ত ও ঊর্বর বদ্বীপীয় ভূমির মানুষ—সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম ছিল এক সমৃদ্ধ মানবসভ্যতার কেন্দ্র। বক্তারা বলেছেন, চট্টগ্রামের বদ্বীপীয় জীবন, মাছ–লবণ–বাণিজ্যনির্ভর অর্থনীতি, আরবীয়, আরাকান–তিব্বত–আসামের সঙ্গে অভিবাসন প্রবাহ, উপকূলীয় মানুষের টিকে থাকার সংগ্রাম এবং এই ভূগোলের কারণে সৃষ্ট অনন্য সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটেছে ।

বক্তারা বলেন,এখানে মুসলিম, বৌদ্ধ, হিন্দু, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সহ সকলের ধারাবাহিকতার সহাবস্থানই এ চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানবসভ্যতার প্রাণশক্তি। সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব পায় চাটগাঁইয়া ভাষার আদি উৎস, ভাষাগত বিবর্তন, ধ্বনিগত বৈশিষ্ট্য ও দক্ষিণ-পূর্ব আর্য–প্রাকৃত–আরাকানি

মগ–তিব্বতি, ফার্সি, আরবি ভাষার প্রভাব।
গবেষকেরা বলেন, চাটগাঁইয়া ভাষা শুধু আঞ্চলিক ভাষা নয়—এটি চট্টগ্রামের হাজার বছরের বসতি, বাণিজ্যপথ ও বহুজাতিক যোগাযোগের ফল। যেটি চর্চা পদের আলোকে আলোচনায় বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
চাটগাঁইয়া ভাষার শব্দভাণ্ডারে ড্রাবিড়, ফার্সি,আরবি,হিন্দি, অস্ট্রো-এশীয় ও তিব্বতি প্রভাবও পাওয়া যায়—যা দক্ষিণ–পূর্ব বঙ্গের প্রাচীন মানব ইতিহাস বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। সম্মেলনে আলোচিত হয় কর্ণফুলী–হালদা–সাঙ্গু নদীর বদ্বীপীয় পরিবর্তন, পতেঙ্গা–কর্ণফুলীর মুখের প্রাচীন ভূপ্রকৃতি, উপকূলীয় সভ্যতার বিকাশ এবং বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসা–বাণিজ্যের ধারাবাহিকতা সারা পৃথিবীতে বিশ্বজয়ের।

গবেষকেরা বলেন, চট্টগ্রাম ছিল বঙ্গের প্রথম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথ—এখানে সমুদ্রই সভ্যতার জন্ম দিয়েছে। সম্মেলনে প্রাচীন চট্টগ্রামের গৌরবান্বিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ও প্রত্নসম্পদ কে সরকারি ভাবে স্থায়ী ভাবে সংরক্ষণের দাবী জানান।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন লেখক লায়ন দুলাল কান্তি বড়ুয়া। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক প্রকৌশলী মৃনাল কান্তি বড়ুয়া। গবেষনা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন ইতিহাসবেত্তা সোহেল মোহাম্মদ ফখরুদ-দীন। আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন প্রবীন ইতিহাসবিদ আলহাজ মো: ফখরুল ইসলাম, প্রবীন শিক্ষাবিদ হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ, ইতিহাসবিদ প্রফেসর এনামুল হক, কক্সবাজার সরকারী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ,শিক্ষাবিদ প্রফেসর শামসুদ্দিন আহমদ, সুফিকবি শাহজাদা সৈয়দ মোহাম্মদ সিরাজুদ্দৌলা, আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান ভাস্কর ডিকে দাশ মামুন,

লেখক গবেষক এস এম ওসমান, প্রাবন্ধিক মো. হাবিবুর রহমান, কবি এম. নুরুল হুদা চৌধুরী, শিক্ষাবিদ আবুল হোসাইন মাস্টার, ডা. ডিকে ঘোষ, সজল কান্তি দাশ, হানিফ মান্নান, জুঁইফুল প্রধান জিএম মামুনুর রশিদ, তারিফ হোসেন, আলোর পথের সম্পাদক সাংবাদিক সোহেল তাজ, মরমী কবি নাজমুল হক শামীম, মানবাধিকার সংগঠক এইচ এম সোহেল, জিয়াউল হক খোন্দকার, ব্যাংকার এস এম আবদুল্লাহ মামুন, এডভোকেট আকতার হোসেন, প্রবীন গবেষক আহমদ হোসেন, লেখক গবেষক মো. শাহজাহান, কবি দেলোয়ার হোসেন মানিক, মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, মো. দিলদার হোসেন,সুমন সেন,ডা. অঞ্জন সেন,এডভোকেট মুবারক হোসেন প্রমুখ।

সিতাজ২৪.কম/এস.টি

Leave A Reply

Your email address will not be published.