রোদ আবারও পালিয়েছে। আকাশ দখল করে নিয়েছে মেঘ, আর দৃষ্টিসীমায় কুয়াশা। রাজধানীতে আবারও শীতের অনুভূতি বাড়ছে। দেশের উত্তরাঞ্চল দিয়ে অবশেষে আসতে শুরু করেছে শীতের হিমেল বাতাস। রংপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ঘন কুয়াশা আর হিম হিম বাতাস ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলজুড়ে শীত ও কুয়াশার সঙ্গে ঝিরঝির বৃষ্টিও শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আজ সোমবারও উত্তরাঞ্চলে ঘন কুয়াশা, হালকা বৃষ্টি আর শীতল বাতাস বয়ে যেতে পারে। আর এতে আরও বাড়তে পারে শীতের অনুভূতি। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত মাঝারি কুয়াশা থাকতে পারে।
এই পূর্বাভাস বলছে, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বেশির ভাগ এলাকার আকাশ থেকে মেঘ সরে যাবে। কুয়াশাও কমে আসবে। এরপর শীত বাড়তে থাকবে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে শীতের দাপট বেশি থাকবে। এরই মধ্যে নওগাঁর বদলগাছিতে গতকাল রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্যান্য স্থানের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, মঙ্গলবার থেকে মেঘ কেটে গিয়ে শীত বাড়তে পারে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে আরেকটি লঘুচাপ। তখন আবারও আকাশ মেঘলা হয়ে শীত কমে আসতে পারে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে যেন এবারের শীতের এক বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তাপমাত্রা কমে শীত জমে উঠতে না উঠতে বঙ্গোপসাগরে শুরু হয় নিম্নচাপ। শীতের বাতাসকে তাড়িয়ে দেয় সমুদ্র থেকে আসা মেঘ আর উষ্ণ বাতাস।
নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত দেশের শীত এ ধারাতেই চলছে।
চলতি ডিসেম্বরের জন্য দেওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে একই ধারার পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে ভারতের দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হেনেছে। এটি বর্তমানে একটি দুর্বল লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। মূলত এর প্রভাবেই বাংলাদেশ ও ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে আকাশ মেঘলা হয়ে আছে।
চলতি ডিসেম্বরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মাসের শেষের দিকে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর–পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ তৈরি হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের সময় দেশের ওই এলাকাগুলোর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের গত নভেম্বর মাসের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, ওই মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৩ দশমিক ৮ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হয়েছে। একমাত্র বরিশাল বিভাগে স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। বাকি এলাকাগুলোতে বৃষ্টি অর্ধেকেরও কম হয়েছে।
সি-তাজ.কম/হামিদ