G-VV5KW25M6F
Take a fresh look at your lifestyle.

কুলসুমার সাজা খাটছেন মিনু

0

 

আদালত আজ মূল রেজিস্ট্রারসহ চট্টগ্রাম জেল সুপারকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর আদেশ দেবেন।
খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কুলসুমা আক্তার। তাঁর জায়গায় তিন বছর ধরে সেই সাজা খাটছেন মিনু আক্তার। বিষয়টি সম্প্রতি ধরা পড়ে চট্টগ্রাম কারাগারে। কুলসুমার বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায়। মিনুর বাড়ি জেলার সীতাকুণ্ডের জাফরাবাদের ছিন্নমূল এলাকায়।

আদালত সূত্র জানায়, মুঠোফোন নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে ২০০৬ সালের ৯ জুলাই চট্টগ্রাম নগরের রহমতগঞ্জ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পোশাককর্মী কোহিনুর বেগমকে হত্যা করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর এই মামলার রায়ে কুলসুমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, প্রকৃত আসামি কুলসুমা আক্তার মামলার সাজা হওয়ার আগে ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন। সাজা হওয়ার পর ২০১৮ সালের ১২ জুন কুলসুমা সেজে মিনু আক্তার কারাগারে আসেন। কারা রেজিস্ট্রারে থাকা দুজনের ছবির মিল নেই। বিষয়টি জানার পর লিখিতভাবে আদালতকে জানানো হয়।

গতকাল সোমবার দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের উপস্থিতিতে মিনু আক্তার বলেন, মর্জিনা আক্তার নামের পূর্বপরিচিত এক নারী তাঁকে টাকা দেওয়ার কথা বলে কারাগারে যেতে বলেন। তিনি কুলসুমাকে চেনেন না। ভয়ে এত দিন কাউকে কিছু বলেননি।

মিনু আক্তারের তিন সন্তানও গতকাল আদালতে আসে। ১০ বছর বয়সী বড় ছেলে মো. ইয়াছিন ও ৭ বছরের মো. গোলাপ মাকে দেখে কান্না করতে থাকে। তারা সীতাকুণ্ডের জাফরাবাদ ইমাম হোসাইন হাকিমিয়া লোকমানিয়া সুন্নিয়া হেফজখানা ও এতিমখানায় তিন বছর ধরে আছে।

ওই এতিমখানার শিক্ষক রাসেল হোসাইন আল কাদেরী বলেন, শিশুরা মাদ্রাসার পাশে একটি ছিন্নমূল কলোনিতে থাকত। মা কারাগারে যাওয়ার পর বাচ্চারা এতিমখানায় বড় হচ্ছে। তিন বছরের জান্নাতুল ফেরদৌসকে ছিন্নমূল এলাকার শাহাদাত হোসেন লালনপালন করছেন।

মিনু আক্তারের ভাই মো. রুবেল বলেন, তাঁর বোন মামলার আসামি নন। আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় বোনের মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারেননি।

মিনুকে আইনি সহায়তা দিয়েছেন চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী গোলাম মাওলা। তিনি বলেন, চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভুঁঞা গতকাল আইনজীবী, কারারক্ষী ও নারী কনস্টেবলের উপস্থিতিতে মিনু আক্তারের জবানবন্দি নিয়েছেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, আদালত মঙ্গলবার (আজ) মূল রেজিস্ট্রারসহ চট্টগ্রাম জেল সুপারকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর আদেশ দেবেন।

এ ব্যাপারে কুলসুমা বেগমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কুলসুমার আইনজীবী ইকবাল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘এক ব্যক্তির মাধ্যমে কাগজপত্র পাওয়ার পর হাইকোর্টে আপিল ও জামিনের আবেদন করি। এখন মামলাটি পরিচালনা করছি না।’

একজনের হয়ে আরেকজনের কারাবাস চট্টগ্রামে নতুন ঘটনা নয়। নগরের চকবাজার থানার একটি মানব পাচার মামলায় হোটেলমালিক মো. আজাদ সেজে টাকার বিনিময়ে চুক্তিতে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর কারাগারে যান হোটেলের কর্মচারী আবদুর রহিম। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ১৭ মার্চ পুলিশ প্রকৃত আসামি আজাদকে গ্রেপ্তার করে। প্রতারণার অভিযোগে দুজনের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা হয়। দুজনই এখন কারাগারে।

সি-তাজ২৪.কম/এস.টি

Leave A Reply

Your email address will not be published.