G-VV5KW25M6F
Take a fresh look at your lifestyle.

মানবতার এক জ্বলন্ত প্রদীপ সজল কানু

0

 

মানুষ মানুষের জন্য” তাইতো তিনি রাতের আঁধারে মোবাইল ফোনের কল্যাণে জানতে পেরে অভুক্তের বাড়ি নিয়ে গেলেন রান্না করা খাবার। তাও আবার নিজের জন্য তৈরি খাবার (বাসায় রান্না করা) থেকে ও থানার মেসেতে রান্না করা খাবার থেকে। রাত প্রায় ১২ টায় দূর্গম পথ দীর্ঘ আনুমানিক ৮ কিলোমিটার দূরে মোটরসাইকেলে করে খাবার নিয়ে গিয়ে নিজ হাতে পরিবেশন করে খাওয়ালেন। শুধু এটাই নয় এর আগেও তিনি থানার পুকুরের মাছ ধরে অসহায় মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে তারা অনাহারে না থাকে। “এ যেন মানবতার এক জ্বলন্ত প্রদীপ”।

বলছিলাম কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সজল কুমার কানুর কথা। যিনি তিন দিন থেকে খাবারের জন্য ভুগতে থাকা হতদরিদ্র বিধবা আছমা বেগমের পরিবারকে রাতের আঁধারে খাবার নিয়ে গিয়ে খাওয়ালেন। আর পেট ভরে ভাত খেলেন তিন দিনের অভুক্ত এই পরিবারের সদস্যরা।

ঘটনাটি উপজেলার তেলিখাল ইউনিয়নের খেছুটিলা গ্রামের।

পুলিশ জানায়, আছমা বেগমের ছেলে আশরাফ (১২) মাটির কাজ করে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পেত। এই টাকায় কোনমতে চলত তাদের সংসার। কিন্তু করোনার কারণে রোজগার বন্ধ হয়ে যায় তার। এই অবস্থায় তিনটি সন্তান নিয়ে গত তিন দিন ধরে চরম খাদ্যসংকটে পড়েন বিধবা আছমা বেগম।

মোটরসাইকেলযোগে ২ টি টিফিন ক্যারিয়ারে করে খাবার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

এমতাবস্থায় ওই গ্রামের কেউ একজন (৮মার্চ) বুধবার রাতে বিষয়টি ওসিকে ফোন করে জানায়। ফোন পেয়েই আছমার নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে বাড়িতে খাবার নিয়ে ছুটে যান ওসি সজল কুমার কানু। এ সময় তার সাথে ছিলেন, এসআই রাজীব চৌধুরীর, এএসআই সিরাজ ও এএসআই মাহফুজ আহমদ।

ওসি জানান, অভুক্ত আছমার পরিবারের জন্য বাসায় রান্না করা ভাত, ডাল, সবজি ও টেংরা মাছ দুইটি টিফিন ক্যারিয়ারে করে মোটরসাইকেলযোগে দূর্গম খেছুটিলা গ্রামে পৌঁছে দেই। তখন রাত পৌনে ১২টা। খাবার হাতে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আছমা। না খেয়ে ঘুমিয়ে থাকা সন্তানদের চোখে-মুখে তখন তৃপ্তির হাসি ফুঠে ওঠে।

তিনি সিলেট জেলার পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাকে মানবতার সেবায় কাজগুলো করার জন্য এই কর্মক্ষেত্র নির্ধারন করে পাঠিয়েছেন তাই আমি কৃতজ্ঞ।

ওসি আরো জানান, এটা আমার চাকুরী জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি। অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় দোকান থেকে চাল, ডাল, আলু কিনতে পারেননি। তাই নগদ ৫০০ টাকা বিধবার হাতে দেন।

তিনি আরো বলেন, প্রিয়, কোম্পানীগঞ্জ বাসী আমাদের দূর্গম এলাকা খেছুটিলায় ১১৫ টি পরিবারের বসবাস করে এবং অধিকাংশ লোক এখানে গরীব। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে যারা ত্রাণ বিতরণ করছেন, একটু দৃষ্টি দিন আমাদের দূরবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলের হতদরিদ্র পরিবার গুলোর প্রতি।

আছমা বেগম বলেন, মেয়ে খোদেজা (৮) পেটে থাকাবস্থায় তার স্বামী চুনু মিয়া ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছি। আজ ওসি স্যার খাবার নিয়ে আসায় রাতে পেট ভরে পরিবার সবাই ভাত খেয়েছি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.